(এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম) : দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ শ্রীলংকা ও পাকিস্তান তাদের অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠে ঘুরে দাঁড়াতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ‘মিরাকল’ অনুসরণ করতে পারে। শ্রীলঙ্কা ভিত্তিক ‘ডেইলি নিউজ’-এ প্রকাশিত একটি ফিচারে এ অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে। শ্রীলংকা যখন একটি বড় ধরনের অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন বাংলাদেশ
দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক ‘মিরাকল’ হিসেবে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ‘শ্রীলংকা ও পাকিস্তন: বাংলাদেশ মডেল থেকে শিক্ষা’ শীর্ষক জন রোজারিও লিখিত এ ফিচারে। ফিচারটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এ বছর তার স্বাধীনতার ৫১ তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে, এবং এর অসাধারণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি অধিকতর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সুবিধা আকর্ষণ দেশটিকে একটি উদীয়মান আঞ্চলিক সংযোগের কেন্দ্রে পরিণত করেছে। বিশ্বব্যাংকের মতে, কাংলাদেশ গত এক দশকে জনসংখ্যাগত সুফল, শক্তিশালী তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানি এবং স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থার কল্যাণে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর অন্যতম হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ ২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পথে রয়েছে। দুই দশকে দারিদ্র্য ৪৩.৫ শতাংশ থেকে ১৪.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (অইএফসি)’র মতে গত সাত বছরে দেশের পোশাক শিল্প তার বার্ষিক আয় ১৯ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩৪ বিলিয়নে উন্নীত হয়েছে, যা ৭৯ শতাংশ বৃদ্ধি সূচিত করে। ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ফ্রেডরিখ নোম্যান ফাউন্ডেশন ফর ফ্রিডম (এফএনএফ দক্ষিণ এশিয়া)’র আঞ্চলিক অফিস কর্তৃক গত ৭ এপ্রিল আয়োজিত ‘বাংলাদেশ: হেনরি কিসিঞ্জারের ঝুড়ি একটি অর্থনৈতিক সাফল্য’ শিরোনামে একটি অনলাইন আলোচনার আয়োজন করে। এ আলোচনা অনুসারে, ২০২১ সালে বাংলাদেশ তার স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করেছে। নি¤œ মাথা পিছু আয়ের দেশ হিসেবে শুরু করা ১৯৭২ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, হেনরি কিসিঞ্জার কথিত ‘বাস্কেট কেস’ সেই নবীন দেশ আজ প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সাফল্যের অনন্য একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে দাঁড়িয়েছে। আজ, দেশটি মাথাপিছু অয় ২,০০০ মার্কিন ডলারের সীমা অতিক্রম করেছে। প্রায় ৩৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের জিডিপি নিয়ে জিডিপির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের চল্লিশটি অর্থনীতির মধ্যে নিজের একটি শীর্ষ অবস্থান নিশ্চিত করেছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, স্বাস্থ্য সেবা ও সামাজিকসহ বিভিন্ন দিক দিয়ে উন্নতি করেছে। ১৯৭০-এর দশকে একটি অত্যন্ত দরিদ্র দেশ থেকে বাংলাদেশ আজ আত্মবিশ্বাসের সাথে দশক শেষের আগেই একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যা হবে একটি বিরাট সাফল্য। এ সাফল্যের পেছনে দেশের জনগণের কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা করে ফিচারে বলা হয়, বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে জনগণই হচ্ছে মূল সম্পদ। প্রাকৃতিক সম্পদ কখনোবা অভিশাপ হতে পারে কিন্তু জনগণ কখনো অভিশাপ হয় না।